ভারতের নাগরিক হয়েও নকল কাগজে বাংলাদেশের এনআইডি: জাতীয় নিরাপত্তায় বড় হুমকি

- আপডেট সময় : ০৯:৫৩:১৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ মে ২০২৫ ২০৫ বার পড়া হয়েছে

আতাউর রহমান (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি
বাংলাদেশের পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলায় দুই ভারতীয় নাগরিক জালিয়াতির মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংগ্রহ করেছেন। ঘটনা প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দেওয়ার চেয়েও বড়—এটি দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার ওপর সরাসরি আঘাত বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
অভিযুক্তরা হলেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ি থানার পশ্চিম মাগুরমারী গ্রামের বাসিন্দা—ভবেন্দ্র নাথ রায় প্রধান ও বজেন্দ্র নাথ রায় প্রধান। তারা আপন ভাই এবং নিজেদের ভারতীয় পরিচয় গোপন রেখে জন্ম নিবন্ধনসহ একাধিক ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে এনআইডি সংগ্রহ করেন। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, বজেন্দ্র নাথের ছেলে হিতেন রায় প্রধান ভারতের আধাসামরিক বাহিনী আসাম রাইফেলসে কর্মরত।
বাংলাদেশের মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়নের জায়গীরপাড়া গ্রামকে স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে দেখিয়ে তারা নাগরিক সনদ, হোল্ডিং ট্যাক্সের কাগজ, ওয়ারিশ সনদসহ একাধিক সরকারি কাগজ সংগ্রহ করেছেন। ২০২৩ সালের ১১ ডিসেম্বর, বোদা উপজেলা নির্বাচন অফিস তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান করে।
তবে অনুসন্ধানে দেখা গেছে, তারা যেই ঠিকানা ব্যবহার করেছেন, সেই এলাকায় কেউ তাদের চেনে না। স্থানীয় বাসিন্দা ও জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, এমন নামের কোনো ব্যক্তি কখনো ওই এলাকায় ছিলেন না। এমনকি তাদের এনআইডিতে স্থানীয় ইউপি সদস্যের স্বাক্ষরও নেই।
অভিযোগ উঠেছে, তারা এসব ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করে শুধু এনআইডিই নয়, ওয়ারিশ সনদ এবং মোবাইল সিম কার্ডও নিয়েছেন। এমনকি বাংলাদেশি পাসপোর্টের জন্যও আবেদন করেছেন।
এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু আনছার মো. রেজাউল করিম জানান, তিনি বিষয়টি জানার পরই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিতভাবে অভিযোগ করেন। এরপর বোদা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ২০২৪ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন কমিশনে জাতীয় পরিচয়পত্র বাতিলের জন্য আবেদন পাঠান।
তবে দুই মাসের বেশি সময় পার হলেও নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এখনও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে প্রশাসনের দায়িত্বহীনতা এবং প্রতিক্রিয়া বিলম্বের বিষয়টিও সমালোচনার মুখে পড়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ধরনের জালিয়াতি শুধু প্রশাসনিক দুর্বলতার প্রতিফলন নয়, বরং দেশের নিরাপত্তার জন্য এক গুরুতর হুমকি। এ বিষয়ে দ্রুত ও কঠোর পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যতে আরও বড় বিপদের আশঙ্কা
রয়েছে।