8:28 am, Saturday, 27 July 2024

পঞ্চগড়ে ‘পীরের নির্দেশে’ কবর-মাজার মৃত্যুর অপেক্ষায় স্বামী-স্ত্রী!

একেএম বজলুর রহমান , পঞ্চগড় প্রতিনিধি

পঞ্চগড় জেলার সদর উপজেলার চাকলাহাটে পীরের নির্দেশে মৃত্যুর আগেই কবর ও মাজার তৈরি করেছেন স্বামী-স্ত্রী৷ মৃত্যুর পর সেখানেই দাফন করার অসিয়ত করেছেন পরিবারকে৷ এর জন্য কবর তৈরি ও সুসজ্জিত পাকা মাজার তৈরি করে রেখেছেন ভাজন আলী ও তার স্ত্রী অবিরন।

নামাজ আদায়সহ দিনের বেশির ভাগ সময় সেখানেই থাকেন তারা। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
১২ বছর ধরে তারা সেই কবরের পাশের ঘরে বসবাস শুরু করেছেন। এখন প্রতীক্ষার প্রহর গুনছেন মৃত্যুর।
ভাজন আলী পঞ্চগড় সদর উপজেলার চাকলাহাট ইউনিয়নের উত্তর ভাটিয়া পাড়া গ্রামের মৃত ঈমান আলীর ছেলে।জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তাঁর বয়স ১০১ হলেও ভাজন আলীর দাবি, তাঁর বয়স আরও বেশি। এবং তার স্ত্রী অবিরনের বয়স ৭৬ বছর।

ভাজন আলীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় ৫০ বছর আগে ময়মনসিংহ জেলার শম্ভুগঞ্জের ছাইফুদ্দীন এনায়েতপুরীর কাছে তিনি বাইয়্যিত নিয়েছিলেন। পীরের আদেশেই তিনি মৃত্যুর আগে কবরস্থান নির্মাণ করেছেন।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, শতবর্ষী বৃদ্ধ ভাজন আলীর তিন ছেলে ও পাঁচ মেয়ে। সরল স্বভাবের মানুষ তিনি।

ভাজন আলী বলেন, আমার বাবা মৃত্যুর আগে তার কবরের জায়গা নির্ধারণ করে গেছেন এবং আমাকে ও আমার স্ত্রীকে বলে গেছেন তাঁর কবরের পাশে আমার স্ত্রীর তারপর আমার কবর দিতে। সে হিসেবে আমরা জায়গা নির্ধারণ করে রাখছি এবং শম্ভুগঞ্জের পীর সাহেবের নির্দেশে আমরা মাটি খনন করে কবর তৈরী করে রাখছি। মৃত্যুর পর আমাকে ও আমার স্ত্রীকে যেন এই ঘরেই যেন দাফন করা হয় এ ফরিয়াদ করে পরিবারের কাছে ওসিয়ত করেছি।

ভাজন আলীর ছেলে আব্দুল জলিল বলেন, আমার বাবা-মা পীরের নির্দেশে কবর তৈরী করে রেখেছেন, তারা মারা যাওয়ার পর তাদেরকে সেখানেই দাফন করা হবে।
অবিরন বলেন, আমার শ্বশুর আমাকে বলে গেছে মা তোমার কবর আমার পাশে থাকবে তারপর আমার ছেলের কবর।

স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, কবর তৈরীর বিষয়টি রীতিমতো এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। শুধু আমাদের গ্রামের নয়; বিভিন্ন এলাকার মানুষও আসছে দেখার জন্য।

 

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

2 thoughts on “পঞ্চগড়ে ‘পীরের নির্দেশে’ কবর-মাজার মৃত্যুর অপেক্ষায় স্বামী-স্ত্রী!

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপডেট সময় : 09:59:57 am, Friday, 15 March 2024
99 বার পড়া হয়েছে
error: Content is protected !!

পঞ্চগড়ে ‘পীরের নির্দেশে’ কবর-মাজার মৃত্যুর অপেক্ষায় স্বামী-স্ত্রী!

আপডেট সময় : 09:59:57 am, Friday, 15 March 2024

পঞ্চগড় জেলার সদর উপজেলার চাকলাহাটে পীরের নির্দেশে মৃত্যুর আগেই কবর ও মাজার তৈরি করেছেন স্বামী-স্ত্রী৷ মৃত্যুর পর সেখানেই দাফন করার অসিয়ত করেছেন পরিবারকে৷ এর জন্য কবর তৈরি ও সুসজ্জিত পাকা মাজার তৈরি করে রেখেছেন ভাজন আলী ও তার স্ত্রী অবিরন।

নামাজ আদায়সহ দিনের বেশির ভাগ সময় সেখানেই থাকেন তারা। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
১২ বছর ধরে তারা সেই কবরের পাশের ঘরে বসবাস শুরু করেছেন। এখন প্রতীক্ষার প্রহর গুনছেন মৃত্যুর।
ভাজন আলী পঞ্চগড় সদর উপজেলার চাকলাহাট ইউনিয়নের উত্তর ভাটিয়া পাড়া গ্রামের মৃত ঈমান আলীর ছেলে।জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তাঁর বয়স ১০১ হলেও ভাজন আলীর দাবি, তাঁর বয়স আরও বেশি। এবং তার স্ত্রী অবিরনের বয়স ৭৬ বছর।

ভাজন আলীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় ৫০ বছর আগে ময়মনসিংহ জেলার শম্ভুগঞ্জের ছাইফুদ্দীন এনায়েতপুরীর কাছে তিনি বাইয়্যিত নিয়েছিলেন। পীরের আদেশেই তিনি মৃত্যুর আগে কবরস্থান নির্মাণ করেছেন।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, শতবর্ষী বৃদ্ধ ভাজন আলীর তিন ছেলে ও পাঁচ মেয়ে। সরল স্বভাবের মানুষ তিনি।

ভাজন আলী বলেন, আমার বাবা মৃত্যুর আগে তার কবরের জায়গা নির্ধারণ করে গেছেন এবং আমাকে ও আমার স্ত্রীকে বলে গেছেন তাঁর কবরের পাশে আমার স্ত্রীর তারপর আমার কবর দিতে। সে হিসেবে আমরা জায়গা নির্ধারণ করে রাখছি এবং শম্ভুগঞ্জের পীর সাহেবের নির্দেশে আমরা মাটি খনন করে কবর তৈরী করে রাখছি। মৃত্যুর পর আমাকে ও আমার স্ত্রীকে যেন এই ঘরেই যেন দাফন করা হয় এ ফরিয়াদ করে পরিবারের কাছে ওসিয়ত করেছি।

ভাজন আলীর ছেলে আব্দুল জলিল বলেন, আমার বাবা-মা পীরের নির্দেশে কবর তৈরী করে রেখেছেন, তারা মারা যাওয়ার পর তাদেরকে সেখানেই দাফন করা হবে।
অবিরন বলেন, আমার শ্বশুর আমাকে বলে গেছে মা তোমার কবর আমার পাশে থাকবে তারপর আমার ছেলের কবর।

স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, কবর তৈরীর বিষয়টি রীতিমতো এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। শুধু আমাদের গ্রামের নয়; বিভিন্ন এলাকার মানুষও আসছে দেখার জন্য।