চুরি প্রতারণা সহ নানান অপকর্ম ঢাকতে যুবদল নেতা পরিচয়। অপকর্ম ঢাকতে বিএনপির যুবদল নেতা পরিচয় বহন।
নিজের অপকর্ম ঢাকতে যুবদলের নেতা পরিচয়
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় দুর্ধর্ষ এক প্রতারক ও গরুচুরি মামলার আসামী নিজের সকল অপকর্ম ঢাকতে রাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী বিএনপির অঙ্গসংগঠন যুবদলের নেতাকর্মী পরিচয়ে নিজের নাম ব্যবহার করে আসছে।
জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার দেবনগড় ইউনিয়নে যুবদল নেতা পরিচয় দানকারী আব্দুল জলিল ওই এলাকায় কুখ্যাত হলেও হটাৎ করে গত কয়েক বছর থেকে নিজেকে যুবদল কর্মী পরিচয় দিয়ে নানান অপকর্ম চালিয়ে আসছে।
জানা যায়, জলিল একই ইউনিয়নের দেবনগড় মাঝগ্রাম এলাকার ভ্যানচালক সহির উদ্দিন ওরফে সরাফত আলীর ছেলে।
তার বিরুদ্ধে গরু চুরি মামলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতারনার মামলা ও অভিযোগ রয়েছে। নিজেকে পঞ্চগড়ের পাথর ও বালি ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানের ব্যবসায়ীদের টাকা হাতিয়ে নিয়ে কোনো পণ্য না দিয়ে প্রতারণা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এছাড়া এলাকায় তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন কোম্পানিতে চাঁদাবাজি, ইন্ডিয়া বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ তেল পাইপলাইনে চাকুরি দেয়ার কথা বলে অর্থ নিয়ে প্রতারণা করাসহ নারী দেহ ব্যবসা ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের অভিযোগ রয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে তার বিরুদ্ধে মানহানি, ছিনতাই, ডাকাতি, হত্যার চেষ্টা সহ নারী শিশু নির্যাতন আইনে মামলার এজাহার দায়ের হয়েছে। একই সাথে তার বিরুদ্ধে সাবেক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও বর্তমান সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩ এ মামলার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
এবং নতুন করে রাজবাড়ী জেলার এক পাথর ব্যাবসায়ীর সাথে প্রতারনা করে প্রায় তিন লক্ষ পঞ্চাশ হাজার হাতিয়ে নেয়ায় তার বিরুদ্ধে মামলার ওয়ারেন্ট ইসুতে গত সাত দিন থেকে জলিলকে আটকের জোর চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।
এর মাঝেও সে গোপন স্থান থেকে টয়লেট/বাথরুমে ঢুকে মে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লাইভে এসে জেলার গণমাধ্যমকর্মী ও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে অশালিন মন্তব্য করে আসছে। যা সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩ পরিপন্থী। কিন্তু এসব বিষয় পঞ্চগড় জেলা বিএনপি বা তেঁতুলিয়া উপজেলা বিএনপি সহ যুবদলের অধিকাংশ নেতা জানলেও তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।
আরো জানা যায়, আব্দুল জলিল গরু চুরি মামলায় ১৮ দিন জেল হাজত বাস করলেও তার চলমার অপরাধ কর্মকান্ডে আওয়ামীলীগের কোনো আশ্রয় না পাওয়ায় অপরাধ কর্মকান্ডে পেশি শক্তি পেতে গত দুই বছর থেকে নিজেকে বিএনপির যুবদলকর্মী পরিচয় দিয়ে আসছে।
তার পূর্বের রাজনৈতিক কোনো পরিচয় খুজে পাওয়া যায়নি। তার সবচেয়ে বেশী চলাফেরা ও দির্ঘ সময় সঙ্গ দিয়েছে স্থানিয় আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ এবং যুবলীগ কর্মিদের সাথে। কিন্তু আব্দুল জলিল হটাৎ যুবদল নেতা হওয়ায় বিশ্বিত স্থানীয় বিএনপি কর্মীরা। সাবেক ছাত্রদল ও যুবদল নেতারাও হতবাগ এমন কর্মী দলে দেখে। তবে বর্তামানেও সে ফেসবুকে পরিচয় দিয়ে আসলেও যুবদলের সক্রিয় কোনো সদস্য নয়।
তার অপরাধ কর্মকান্ডে প্রশাসনিক কোনো চাপ সৃষ্টি হলেই সে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেকে বিএনপি কর্মী পরিচয় দিতে দেখা যায়। তাকে গত ১৫ বছরে বিএনপির রাজনৈতিক কোনো কর্মসুচিতে খুজে পাওয়া যায়নি।
তার নাম দেবনগড় ইউনিয়ন যুবদলের আহবায়ক কমেটিতে কি ভাবে এসেছে তা জানেনা অনেক সদস্যই। তাই এমন বিতর্কিত ব্যাক্তিকে বহিস্কার সহ তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার দাবি উঠেছে দেবনগর ইউনিয়ন যুবদলের আহব্বায়ক কমেটিতে।
তবে জলিল হটাৎ বিএনপির যুবদল নেতা হওয়ার কারন অনুসন্ধানে জানা যায়, বর্তমান পঞ্চগড় জেলা ও তেঁতুলিয়া উপজেলা যুবদলের আহব্বায়ক কমেটির কয়েকজন নেতা তাদের কর্মী সমর্থক বারাতে বা নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে এমন কিছু ব্যাক্তিদের দলে সুযোগ দিয়ে এসেছে।
দেবনগড় ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য সচিব রুবেল ইসলাম জানান, আব্দুল জলিলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে তার নানান অপকর্মের খবর প্রচারিত হওয়ায় সংগঠনের সদস্য সহ বিএনপির সিনিয়র তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জোর দাবি তুলেন। এদিকে জরুরী সভা ডেকে আলোচনার মাধ্যমে তাকে দল থেকে অব্যাহতি দিতে উপজেলা যুবদলের আহব্বায়ক বরাবর স্বারকলিপি প্রেরন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা যুবদলের আহব্বায়ক আবু নোমান এনাম বলেন, আমি জরুরী কাজে জেলার বাইরে রয়েছি। তবে আব্দুল জলিলের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ হোয়াটস্যাপে পেয়েছি। এলাকায় ফিরে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে জেলা যুবদলের সদস্য সচিব নুরুজ্জামান বাবু বলেন, ইউনিয়ন যুবদলের তথ্যে অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা যুবদলের আহব্বায়ক কমিটি তথ্য প্রমাণ যাচাই করে যা সিদ্ধান্ত নিবে আমরা জেলা যুবদল তাতে সমর্থন করবো।