দেবীগঞ্জে ৬৫ বছরে বৃদ্ধা হত্যাকান্ডের ৮ ঘন্টায় আলামত সহ দুই আসামী গ্রেফতার
লালন সরকার,দেবীগঞ্জ
পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ পৌরসভায় নিখোঁজের ৫ দিন পর বাড়ির উঠানে থাকা পরিত্যাক্ত সেপটিক ট্যাংকের নিচে মাটি চাপা অবস্থায় চিন্তা ঋষি (৬৫) নামে এক ভিক্ষুক বৃদ্ধার মরদেহ উদ্ধারের ৮ ঘন্টার মাথায় হত্যাকান্ডে ব্যবহৃহ আলামত উদ্ধার সহ দুই আসামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। একই সাথে হত্যাকান্ডের রহস্য উম্মোচন হয়েছে।হত্যাকান্ডের আসামীরা হলেন, নীলফামারীর জলঢাকা বালাগ্রাম চন্ডীহাটি এলাকার মৃত খগেশ্বরের ছেলে ও চিন্তা ঋষির জামাই মুকুল চন্দ্র রায় (৩৬) ও একই জেলার ডিমলা থানার উত্তর সোনাখুলি এলাকার দেবদাস ঋষির ছেলে ও চিন্তা ঋষির নাতনী জামাই মহাদেব ঋষি (২৫)।আজ মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) দুপুরে আসামীদের আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।এর আগে পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) কনক কুমার দাস এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান।জানা যায়, গত ৭ বছর আগে পূর্বের বিয়ের কথা গোপন রেখে চিন্তা ঋষির মেয়ে রেনুর সাথে বিয়ে হয় মুকুলের। এর মাঝে বিষয়টি প্রকাশ পেলে রেনু মুকুলকে তালাক দেন। এদিকে রেনুর কাজের সন্ধানে ঢাকায় গিয়ে আল আমিন নামে এক যুবকের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। এর মাঝে তারা দেবীগঞ্জে আসলে মুকুল বিষয়টি জানতে পারে। আর এই পরকিয়ার জেরে রেনুকে হুমকি দিয়ে এই হত্যার ঘটনা ঘটনো হয়েছে। ওই ভিক্ষুক বৃদ্ধাকে প্রথমে গলা কেটে ও শরীরে আঘাত করে হত্যার পর মহাদেব ঋষির সহায়তায় পরিত্যাক্ত সেপটিক ট্যাংকের নিচে ফেলে মাটি চাপা দেয়া হয়।স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, চিন্তা ঋষি পৌরসভা ২ নং ওয়ার্ডের মধ্যপাড়ার মৃত ধরনী ঋষির স্ত্রী। তিনি বাসায় একা থাকতেন। তার একমাত্র মেয়ে রেনু ঢাকায় থাকেন। গত ৫ দিন থেকে চিন্তা ঋষিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। সোমবার স্থানীয়রা বাসায় খোঁজ নিতে এসে সেপটিক ট্যাংকের আশপাশে অস্বাভাবিক দুর্গন্ধ ছরাইতে থাকিলে সন্দেহজনক মনে হওয়ায় পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে সেপটিক ট্যাংকের ঢাকনা সরালে মাটি ভরাট অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে মাটি সরালে চিন্তা ঋষির মরদেহ দেখতে পাওয়া যায়।আসামী গত মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) আনুমানিক রাত সাড়ে ১২ টা থেকে রাত ১ টার সময় মুকুল তার শাশুড়ির ঘরে গিয়ে ধারালো ছোড়া দিয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় চিন্তা ঋষির শ্বাসনালী কেটে দেয় এবং বুকে ও পেটের ডান দিকে কোপ দেয়। শাশুড়ির মৃত্যু নিশ্চিতের পর মুকুল বাসার পরিত্যাক্ত সেপটিক ট্যাংকে মরদেহ ঋষির সহায়তায় মাটি চাপা দেয়। এরপর ভোর ৪ টার দিকে মুকুল জলঢাকায় নিজ বাসায় ফিরে যান।লাশ উদ্ধার কাজে যে সকল মানবিক পুলিশ সদস্য উপস্থিত ছিলেন,দেবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরকার ইফতেখারুল মোকাদ্দেম (ওসি) তদন্ত রঞ্জু আহমেদ,এসআই একেএম মঈন উদ্দিন, এসআই কামাল উদ্দিন,এসআই ইয়াকুবসহ পুলিশ সদস্যগণ। মরদেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন দেবীগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মোছাঃ রুনা লায়লা ও দেবীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আবু বকর সিদ্দিক ২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শহিদুল ইসলাম সরকারসহ অন্যান্য কাউন্সিলরগণ।এই ঘটনায় মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) বৃদ্ধার মেয়ে রেনু ঋষি বাদী হয়ে দেবীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।