দেবীগঞ্জে চোর অপবাদ দিয়ে যুবককে মধ্যযুগীয় কায়দায় অমানবিক নির্যাতন
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে চুরির অপবাদ দিয়ে দুই যুবককে মধ্যযুগীয় কায়দায় অমানবিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এতে এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার (১৭- নভেম্বর) দেবীগঞ্জ পৌরসভা ৮ নং ওয়ার্ডের কলেজ পাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। ভোর রাতে মো: রিপন ইসলাম ও রানা নামে দুই যুবককে চোর সন্দেহে আটক করেন কলেজ পাড়ার মোঃ শামীম ইসলাম (৩৮)পিতা মৃত হযরত আলী। মোঃ রিপন ইসলাম (২২) পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের মো: আবুল কালামের ছেলে, মো: রানা ইসলাম (২১) উপজেলার সোনাহার মল্লিকা দহ ভাটিবাড়ী এলাকার মোঃ হবিবর রহমানের ছেলে। তাদের আটকের পর সকালে এলাকায় জানাজানি হয় । ঘটনার বিষয়ে স্থানীয়দের কাছে জানতে চাইলে স্থানীয়রা জানান, আজ এলাকায় কোনো কিছু চুরি যায়নি । ইতিপূর্বে আমাদের এলাকায় গরু, ছাগল, মটর পাম্প, বিভিন্ন সামগ্রী চুরি হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আজ ভোররাতে রিপন ও রানাকে আটক করেছেন শামীম। আমরা সকলে দেখতে পাই শামীমের বাড়ির সামনে গাছের সাথে তাদের বেঁধে রেখেছে। রিপন ও রানা মাদক সেবী। তারা মাদকের সাথে জড়িত। আমাদের চুরি যাওয়া ঘটনার সাথে মাদক সেবীরাই জড়িত। ঘটনার বিষয়ে শামীম বলেন, দুই তিন দিন আগে বাসা থেকে অটো ভ্যানের একটি চার্জার হারিয়ে যায়। এই টেনশনে ঘুম আসেনা। ভোররাতে আমার বাড়ির সামানে দিয়ে যাওয়ার পথে রিপন ও রানা দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। এ সময় আমি তাদেরকে দৌড়ে ধরি এবং জিজ্ঞাসাবাদ করি, আমার চার্জার কে নিয়েছে তোরা বল ? একপর্যায়ে তারা দুজনে অস্বীকার করেন। এবং বলে আমরা চার্জার নেইনি। তাদের কথায় বিশ্বাস না করে তাদেরকে আটক করে গাছের সাথে বেঁধে রাখি। এ বিষয়ে, অভিযুক্ত দুই আসামী রিপন ও রানাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা বলেন, চুরি করার উদ্দেশ্যে আসিনি। আমরা কালুর হোটেল থেকে ভাত খেয়ে এই রাস্তা শর্টকাট এর জন্য আমরা ঢুকে পরি। শামীম ভাইয়ের সাথে দেখা হলে আমরা কথা বলি। পরক্ষণে আমাদের কথা না শোনে শামীম ভাই আমাদেরকে গাছের সাথে বেঁধে রাখে। রিপন একপর্যায়ে বলে ফেলেন, দেবীগঞ্জে চোরের গডফাদার হলেন শামীম। তিনি আমাদেরকে কেন আটক করলেন ? এ কথা বলার সাথে সাথে রিপন ও রানাকে পূর্ব শত্রুতার জেরে মাদক ব্যবসায়ী শামীম ও তার ছেলে সুজন ইসলাম, সাকিব ইসলাম এবং ভাতিজা মনির এলোপাথাড়ি মারপিট শুরু করেন। মারপিটের সময় রিপন ও রানা চিৎকার দিয়ে বলে, আমাকে বাঁচাও, আমাকে বাঁচাও। এ সময় স্থানীয়রা বিষয়টি দেবীগঞ্জ থানা পুলিশ’কে জানালে ঘটনাস্থল থেকে রিপন ও রানাকে উদ্ধার করে নিয়ে যান দেবীগঞ্জ থানা পুলিশ। এ বিষয়ে দেবীগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরকার ইফতেখারুল মোকাদ্দেম জানান, অভিযুক্ত রিপন ও রানার পূর্বের মামলার ওয়ারেন্ট আছে। আমরা তাদেরকে আদালতে প্রেরণ করেছি। আজকের ঘটনার কোন মামলা হয়নি। পূর্বশত্রুতার জের ধরে এমন পাশবিক নির্যাতনের দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন স্থানীয় সাধারণ মানুষ।