9:06 pm, Thursday, 10 October 2024
সংবাদ শিরোনাম ::
কাননচক মাদ্রাসা, শিশু থেকে বৃদ্ধ সবাই যেন একই সুতোয় গাঁথা।
প্রবাদ আছে যে “শিক্ষা মানেনা বয়সের তারতম্য” এরই অনন্য উদাহরণ যেন কাননচক মাদ্রাসা। বলছি বাগেরহাটের চিতলমারীর প্রত্যন্ত এলাকা কানানচক গ্রামে গড়ে ওঠা দ্বীনি প্রতিষ্ঠান কাননচক মাদ্রাসার কথা। যেখানে একই সাথে সহীহ ভাবে কুরআন শেখার সুযোগ পাচ্ছেন, ডাক্তার, ইন্জিনিয়ার, অ্যাডভোকেট, শিক্ষক,সাংবাদিক, মাওলানা সহ স্কুল ও কলেজের বিভিন্ন বয়সের শিক্ষার্থী। তাইতো দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সকল বয়সের কুরআন পিপাসু শিক্ষার্থীরা ছুটে আসছেন এখানে। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাদ্রাসাটি তে বর্তমানে প্রায় ২৫০ জন ছাত্র একই সাথে পড়াশোনা করছেন। যাদের মধ্যে ডাক্তার, ইন্জিনিয়ার, শিক্ষক সহ ৫ বছরের শিশু থেকে শুরু করে ষাটোর্ধ বৃদ্ধ পর্যন্ত একই সাথে পবিত্র কুরআন শিখছেন। তাদেরকে সঠিকভাবে পাঠদান করানোর জন্য ৫ জন শিক্ষক। নিরলসভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। সেই সাথে তাদেরকে কুরআনের পাশাপাশি জেনারেল শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষক বৃন্দ। মাদ্রাসার বাংলা বিভাগের শিক্ষক শেখ হেকম আলী বলেন, আমি এখানে প্রায় ৩২ বছর ধরে শিক্ষকতা করছি। কিন্তু এরকম একটি দ্বীনি প্রতিষ্ঠান কোথাও দেখিনি। যেখানে একই সাথে শিশু এবং বৃদ্ধ সবাই পড়ালেখার সুযোগ পাচ্ছে। তাছাড়া এখানে কোনো কালেকশন করা হয় না। ছাত্রদের বেতনের টাকা দিয়েই চলে খরচ। তিনি বলেন, বাংলাদেশে এরকম ২ টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে যার মধ্যে একটি হলো মোমিন বাড়ি আর অন্যটি কানানচক। সারা দেশে যেন এরকম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আরো গড়ে ওঠে সে আশা ব্যাক্ত করেন তিনি। মাদ্রাসায় অধ্যায়নরত শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহর কাছে জানতে চাইলে বলেন, তিনি পূর্বে একটি কলেজ থেকো মাস্টার্স শেষ করছেন। পরবর্তীতে যখন বুঝতে পেরেছেন পবিত্র কুরআন শেখা তার জন্য আবশ্যক তখন তিনি তার নিজ জেলা যশোর সহ অন্য কোথাও তার বয়সের মানুষের জন্য কুরআন শেখার মতো মাদ্রাসা খুজে পাচ্ছিলেন না তখনই তিনি কোনো এক সুত্রে কাননচক মাদ্রাসার কথা জানতে পারেন এবং এখানে ছুটে আসেন। তিনি ছাড়াও কয়েকজন বয়স্ক শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে তাদের অভিমত জানতে চাইলে তারাও একই ধরনের অভিমত ব্যাক্ত করেন। মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক ক্বারী আবুল হাসান বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রায় সকল বয়সের শিক্ষার্থীরা ছুটে আসেন কুরআন শেখার জন্য। এখানে বর্তমান প্রায় ২৫০ জন ছাত্র পড়ালেখা করছেন। এরমধ্যে দাওরায়ে হাদিস পাশ ছাত্র রয়েছেন প্রায় ৭ জন। এছাড়াও মাদ্রাসায় বর্তমানে একজন নওমুসলিম শিক্ষার্থী সহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার শিক্ষার্থীরা পবিত্র কুরআন শিখতেছেন। মাদ্রাসার মুহতামিম ক্বারী জাহাঁতাব হোসেন বলেন, আমি এখানে যখন যুক্ত হয়েছি তখন থেকে একটি বিষয় অনুভব করেছি তাহলো, দ্বীনি মনোভাবের কিছু শিক্ষার্থী যারা আলিয়া মাদ্রাসা, কওমি মাদ্রাসা কিংবা স্কুল কলেজ থেকে বিভিন্ন সময় ঝরে পড়ে যায়। পরবর্তীতে তাদের কুরআন শেখার আর কোনো উপায় থাকেনা। কিন্তু ওই শিক্ষার্থী গুলো এখানে এসে কুরআন শেখার সুযোগ পাচ্ছে। এবং তাদেরকে মডিফাই করে তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী তৈরী করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তিনি আরও বলেন এখান থেকে ক্বিরাত শেষ করে শিক্ষার্থীরা দেশের বিভিন্ন মসজিদ মাদ্রাসা সহ বিভিন্ন স্থানে কর্মসংস্থান তৈরী করতে সক্ষম হচ্ছেন। এছাড়াও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কুরআন শিক্ষা কোর্স চালু করার মহান উদ্যোগের কথা ও ব্যাক্ত করেন তিনি।
ট্যাগস :