ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:
ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বড়পলাশবাড়ী ইউনয়নের মশালডাঙ্গী গ্রামে অজ্ঞাত রোগে প্রতিনিয়ত মারা যাচ্ছে গবাদিপশু গরু। এমন ঘটনায় দুশ্চিন্তা ও আতঙ্কে দিন পার করছেন দুই গ্রামের মানুষ। অজ্ঞাত রোগে সীমান্ত ঘেষা মশালডাঙ্গী গ্রাম ও পাশ্ববর্তী ৪নং কলোনীতে গত দুই মাসে ২০ জন কৃষকের অর্ধশত গরু মারা গেছে। এর মধ্যে গত এক সপ্তাহে মারা গেছে ১৯টি গরু।
বুধবার সরেজমিনে দুই গ্রামের কয়েকজন কৃষকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিদিন অজ্ঞাত এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে গরু। আক্রান্ত হওয়ার ৬-১০ ঘন্টার মধ্যে মারা যাচ্ছে। রোগ নির্ণয় না করতে পারার কারণে কোন ধরণের চিকিৎসা কাজে আসছে না।
দুই দিনে দুটি গরু মারা যাওয়া কৃষক আব্দুল জলিল বলেন, অনেক কষ্ট করে গরু লালন পালন করি। গরু বিক্রি করে মেয়ের বিয়ে দেব ভেবেছিলাম কিন্তু সব স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে গেল।
প্রথমে গরুর শরীর গরম হয়ে যায়, এরপরে পেট ফুলে গিয়ে খাওয়া দাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। এমন করে ৬-১০ ঘন্টা পর মারা যায় গরু। এক লাখ টাকার বেশি ক্ষতি হয়ে গেল আমার। আরো দুটা গরু আছে সেটা নিয়েও দুশ্চিন্তায় রাতে ঘুম হয় না।
আইয়ুব আলী নামে আরেক কৃষক বলেন, সীমান্ত ঘেষা এই দুটি গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ গরু পালন ও কৃষি কাজের উপর নির্ভরশীল। গরু বিক্রি করে কৃষি কাজ, ছেলে মেয়ের পড়াশোনা, বিয়ে ইত্যাদি সকল খরচ বহন করি। সীমান্তে চারণ ভূমি থাকায় গরু পালনে বেশ সুবিধা রয়েছে আমাদের। দুই গ্রামে অন্তত দেড় হাজার গরু পালছেন স্থানীয় কৃষকরা। গত দুই মাসে অর্ধশত গরু মারা গেছে দুটি গ্রামে। অনেকে নিঃস্ব হয়ে গেছেন।
বড়পলাশবাড়ী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম জানান, গ্রাম দুটোর একদম কাছাকাছি ভারতের সীমান্ত। সব পরিবারে গরু লালন পালন করে থাকেন। কয়েক দিন থেকে ভাইরাসের প্রখরতা বেশি লক্ষ করা যাচ্ছে। প্রতিনিয়ত কারো না কারো গরু মারা যাচ্ছে।
এই ভাইরাস ভারত থেকে এসেছে কিনা এটা সনাক্ত করা জরুরি। সেই সাথে বাকী গবাদি পশুগুলোর চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় প্রাণীসম্পদকে আহবান জানাচ্ছি।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা নাসিরুল ইসলাম বলেন, আমরা সরেজমিনে সেই দুটি গ্রামে গিয়েছিলাম। গত এক সপ্তাহে বেশ কয়েকটি গরু মারা গেছে। প্রাথমিক ভাবে আমাদের বাদলা ভাইরাস মনে হয়েছে। এ ছাড়াও সীমান্তে লালন পালন হওয়ায় এটি ভারত থেকে আসা কোন ভাইরাস হতে পারে। আমরা কিছু গরুকে বাদলা ভাইরাসের ভ্যাকসিন প্রদান করেছি। আর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। দ্রæত সময়ের মধ্যে শনাক্ত করে আমরা চিকিৎসা ও পরামর্শ প্রদান করা হবে।
Editor: Ataur Rahman
News Editor: Shamim Reja
Phone no: +8801710048702
Email: ajkerkantho.news@gmail.com
Office email: admin@ajkerkantho.com
দৈনিক আজকের কন্ঠ