পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে প্রানিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত
একেএম বজলুর রহমান, পঞ্চগড় প্রতিনিধি
সারা দেশের ন্যায় পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার দন্ডপাল ইউনিয়নের কালীগঞ্জে প্রানিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে। সারা দেশের ন্যায় পঞ্চগড়ের ৫ উপজেলায় ৪ দিন ব্যাপী প্রানিসম্পদ সেবা সপ্তাহ চলবে। প্রদর্শনী উপলক্ষে কালীগঞ্জ সুকাতু প্রধান উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে উদ্ভোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা এমপি প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চ্যুয়ালের মাধ্যমে বক্তব্য দেন। দেবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরীফুল আলমের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দেবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক চিশতি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দেবীগঞ্জ উপজেলা প্রানিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ সারাবন তহুরা, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা গোলাম আজম, দন্ডপাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আজগড় আলী, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা রতন কুমার বর্মন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন উপজেলা প্রানিসম্পদ সম্প্রসারন কর্মকর্তা ডাঃ নেওয়াজ শরীফ। এ সেবা সপ্তাহ ১৮ এপ্রিল থেকে ২২ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে। প্রদর্শনীতে ৩৭ জন খামারি অংশ নেন। সকলের জন্য নিরাপদ, পর্যাপ্ত ও মানসম্মত প্রানিজ আমিষ সরবরাহ নিশ্চিতকরনের ভিশন নিয়ে দেবীগঞ্জ উপজেলা প্রানিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেনারি হাসপাতাল এ প্রদর্শনীর আয়োজন করে। প্রানিসম্পদ মন্ত্রনালয়ের প্রানিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রানিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের (এলডিডিপ) সহযোগিতায় এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। প্রানিস্বাস্থ্য সেবা প্রদান, প্রানিজ উৎপাদন ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি এবং মূল্য সংযোজনের মাধ্যমে প্রানিজ আমিষের চাহিদা পুরনের মিশন নিয়ে কাজ করছে প্রানিসস্পদ বিভাগ। প্রানিসম্পদের উৎপাদন বৃদ্ধি করা, দুগ্ধজাত পন্যের বাজার সৃষ্টি করা, ক্ষুদ্র খামারি ও উদ্যোক্তাদের প্রতিকুল পরিবেশে মোকাবেলায় সক্ষমতা সৃষ্টি, বিজ্ঞান ভিত্তিক লালন পালন বিষয়ক কৌশল অবহতি করা, উন্নতজাতের পশুপাখি পালনের আধুনিক ব্যবস্থাপনা বিষয়ে পরামর্শ প্রদান করা, জনসাধারণের জন্য নিরাপদ প্রানিজ আমিষ সরবরাহ নিশ্চিত করাই প্রানি সম্পদ প্রদর্শনীর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। প্রানিসম্পদ ও ডেইরী উন্নয়ন প্রকল্প করোনাকালীন সময়ে সারা দেশে ৪ লক্ষ ৭ হাজার ৪০২ জন খামারিকে ৭শ কোটি টাকা প্রানোদনা দিয়েছে। বিনামূল্যে খামারিদের কৃমি নাশক, জীবাণুনাশক ও খামারের বিভিন্ন উপকরন বিতরন করা হয়েছে। খামার ও খামারির উন্নয়নের লক্ষ্যে সারা দেশে ৫ হাজার ৫শ টি প্রডিসিসার গ্রুপ বা উৎপাদনকারী দল গঠন করা হয়। করোনাকালীন সময়ে ও রমজান মাসে সারা দেশে সুলভ মূল্যে ভ্রাম্যমান বিক্রয় কেন্দ্রের মাধ্যমে দুধ, ডিম, মাংস বিক্রয় করা হয়। গবাদি পশুর জরুরি চিকিৎসার জন্য সারা দেশে ৩৬০ টি মোবাইল ভেটেনারি ক্লিনিক প্রদান, আল্ট্রাসাউন্ট মেশিনের মাধ্যমে গবাদি পশুর চিকিৎসার ব্যবস্থা করা, মিল্ক ক্রিম সেপারেটর মেশিন প্রদান, সাংবাদিক ও গণমাধ্যম কর্মীদের মধ্যে ৩ ক্যাটাগরিতে ১১টি পুরস্কার প্রদান করা হয়। পহেলা জুন বিশ্বদুগ্ধ দিবসে ৪০ জন খামারিকে খামারি ও উদ্যোক্তাকে ডেইরি আইকন হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়। ৩শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিনামূল্যে দুধ খাওয়ানোর কর্মসূচি গ্রহন করা হয়। ২০২২- ২০২৩ অর্থ বছরে জাতীয় অর্থনীতিতে প্রানিসস্পদ ও পোল্টি সেক্টরে জিডিপিতে শতকরা ৩.২৩ প্রবৃদ্ধি করেছে। প্রানি সম্পদে মোট জিডিপি ৭৩ হাজার ৫৭১ কোটি টাকা। এখানে প্রত্যক্ষ কর্মসংস্থান হয়েছে শতকরা ২০ আর পরোক্ষ কর্মসংস্থান শতকরা ৫০। টেকশই উন্নয়নে ১৭ টি লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে ৯টির সাথে প্রানিসম্পদ সরাসরি জড়িত রয়েছে। ক্ষুধা দূরীকরন, দারিদ্র্যমুক্ত জাতি গঠন, সবার জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি নিশ্চিতকরনের মতো লক্ষ্যগুলোর সাথে প্রানিসম্পদ সরাসরি সম্পুক্ত। এসডিজি বাস্তবায়নের মাধ্যমেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে উঠবে।