6:17 am, Saturday, 27 July 2024

পঞ্চগড় আদালতে ৩০২ ধারা’র হত্যা মামলার আসামিদেরকে জামিন দেওয়ায় বিচারকের প্রতি ক্ষিপ্ত জুতা নিক্ষেপ

মোঃ লালন সরকার, দেবীগঞ্জ

পঞ্চগড়ে হত্যা মামলার আসামীদের জামিন মঞ্জুর করায় ক্ষিপ্ত হয়ে বিচারকের প্রতি জুতা নিক্ষেপ করেছেন মামলার বাদী।সোমবার (১১- ডিসেম্বর) সকাল আনুমানিক সাড়ে এগারোটার সময় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত পঞ্চগড় এর বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিসেট্রট জনাব অলরাম কার্জী এর আদালতে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটে। উল্লেখ্য গত মঙ্গলবার (৫-ডিসেম্বর) সকাল দশটার দিকে পঞ্চগড় সদর উপজেলার সাতমেরা ইউনিয়নের সাহেবীজোত গ্রামে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে মোঃ ইয়াকুব আলী (৮৩) নামে এক ব্যক্তি সম্পর্কে ভাই মোঃ মোমিন(৫৫) এর পরিবারের সাথে সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত হন। এ ঘটনায় মৃত ইয়াকুব আলী’র মেয়ে মোছাঃ মিনারা আক্তার (২৫) বাদী হয়ে মোঃ মমিন(৫৫) সহ ১৯ জনের নাম উল্লখ করে পঞ্চগড় সদর থানা পুলিশের কাছে লিখিত এজাহার জমা দেন। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী আজকে নিহত ইয়াকুব আলী’র বাড়িতে কুলখানি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এদিকে আদালতে ৪নং থেকে ১৯নং পর্যন্ত ১৬ জন আসামী জামিনে মুক্তি পেলে মামলার বাদী মোছাঃ মিনারা আক্তার বিচারকের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে জুতা ছুঁড়ে মারেন। এতে আদালত চত্বরে চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। মিনারা আক্তার’কে পুলিশ আটক করে। এ বিষয়ে বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট হাবিবুল ইসলাম (হাবিব) বলেন, আমরা জামিনের বিরুদ্ধে আপত্তি জানালে বিজ্ঞ আদালত আমাদের কাছে নিহতের সুরতহাল রিপোর্ট চাচ্ছে।ময়নাতদন্তের রিপোর্ট চাচ্ছে। সুরতহাল রিপোর্ট, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ব্যাক্তিগত আইনজীবী হিসেবে আমাদের দাঁড়া সরবরাহ করা সম্ভব নয়। বিজ্ঞ আদালত কেন আমাদের কাছে সুরতহাল রিপোর্ট চাচ্ছে তা বিজ্ঞ আদালতের ব্যাক্তিগত বিষয়। সদ্য ঘটে যাওয়া ৩০২ ধারায় হত্যা মামলার আসামী জামিন দেওয়া সেটা আদালতের বিষয়। কিন্তু জনাব অলরাম কার্জী স্যার ৩০৭ ধারায় আসামী জামিন দিতে গড়িমসি করেন। ৩২৩ ধারার আসামী হাজতে নেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু আজকে ৩০২ ধারার আসামী ভালো করে শুনানি না শুনে, তদন্ত রিপোর্ট আসার আগেই আগামী ধার্য তারিখ পর্যন্ত আসামীদের জামিন দিলেন। আমাদের দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতায় একটা হত্যাকাণ্ড ঘটনায় আসামী সাত দিনের মধ্যে জামিন পান আমরা দেখিনি। আসামীরা জামিন পেলে বাদী কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন এবং নিচে পড়ে যায়। তাকে তুলতে গেলে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে পায়ের একটি স্যান্ডেল সিটকে উপরে উঠে। তিনি আদালতকে বলতে থাকেন, একটি হত্যা মামলার আসামী সকলে জামিন পেলেন। একজনেও জেল হাজতে গেল না। আমরা সবাই নিরাপত্তা হীনতায় থাকবো। আমি নিজেও আদালতকে বলেছি এ ধরনের অপরাধে আসামীরা জামিন পেলে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হবে। এ ঘটনায় অ্যাডভোকেট আবু ইউনুস আলী (লেলিন) বলেন, জামিন শুনানি হচ্ছিল। বাদী পক্ষ থেকে আপত্তি দিয়েছিল। আদালত শুনানিতে সন্তুষ্ট হয়ে আসামীদের জামিন দিলে বাদী বিচারককে স্যান্ডেল ছুড়ে মারেন। কাউকে জামিন দেওয়া বা নাদেওয়া সেটা আদালতের ব্যাপার। বিচার চলাকালীন বিচারকের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে জুতা ছুঁড়ে মারা, আজকে উনাকে মারছে কালকে আরেক জনকে মারবে এটা ঠিক হয়নি।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপডেট সময় : 09:39:47 pm, Monday, 11 December 2023
110 বার পড়া হয়েছে
error: Content is protected !!

পঞ্চগড় আদালতে ৩০২ ধারা’র হত্যা মামলার আসামিদেরকে জামিন দেওয়ায় বিচারকের প্রতি ক্ষিপ্ত জুতা নিক্ষেপ

আপডেট সময় : 09:39:47 pm, Monday, 11 December 2023

পঞ্চগড়ে হত্যা মামলার আসামীদের জামিন মঞ্জুর করায় ক্ষিপ্ত হয়ে বিচারকের প্রতি জুতা নিক্ষেপ করেছেন মামলার বাদী।সোমবার (১১- ডিসেম্বর) সকাল আনুমানিক সাড়ে এগারোটার সময় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত পঞ্চগড় এর বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিসেট্রট জনাব অলরাম কার্জী এর আদালতে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটে। উল্লেখ্য গত মঙ্গলবার (৫-ডিসেম্বর) সকাল দশটার দিকে পঞ্চগড় সদর উপজেলার সাতমেরা ইউনিয়নের সাহেবীজোত গ্রামে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে মোঃ ইয়াকুব আলী (৮৩) নামে এক ব্যক্তি সম্পর্কে ভাই মোঃ মোমিন(৫৫) এর পরিবারের সাথে সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত হন। এ ঘটনায় মৃত ইয়াকুব আলী’র মেয়ে মোছাঃ মিনারা আক্তার (২৫) বাদী হয়ে মোঃ মমিন(৫৫) সহ ১৯ জনের নাম উল্লখ করে পঞ্চগড় সদর থানা পুলিশের কাছে লিখিত এজাহার জমা দেন। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী আজকে নিহত ইয়াকুব আলী’র বাড়িতে কুলখানি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এদিকে আদালতে ৪নং থেকে ১৯নং পর্যন্ত ১৬ জন আসামী জামিনে মুক্তি পেলে মামলার বাদী মোছাঃ মিনারা আক্তার বিচারকের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে জুতা ছুঁড়ে মারেন। এতে আদালত চত্বরে চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। মিনারা আক্তার’কে পুলিশ আটক করে। এ বিষয়ে বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট হাবিবুল ইসলাম (হাবিব) বলেন, আমরা জামিনের বিরুদ্ধে আপত্তি জানালে বিজ্ঞ আদালত আমাদের কাছে নিহতের সুরতহাল রিপোর্ট চাচ্ছে।ময়নাতদন্তের রিপোর্ট চাচ্ছে। সুরতহাল রিপোর্ট, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ব্যাক্তিগত আইনজীবী হিসেবে আমাদের দাঁড়া সরবরাহ করা সম্ভব নয়। বিজ্ঞ আদালত কেন আমাদের কাছে সুরতহাল রিপোর্ট চাচ্ছে তা বিজ্ঞ আদালতের ব্যাক্তিগত বিষয়। সদ্য ঘটে যাওয়া ৩০২ ধারায় হত্যা মামলার আসামী জামিন দেওয়া সেটা আদালতের বিষয়। কিন্তু জনাব অলরাম কার্জী স্যার ৩০৭ ধারায় আসামী জামিন দিতে গড়িমসি করেন। ৩২৩ ধারার আসামী হাজতে নেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু আজকে ৩০২ ধারার আসামী ভালো করে শুনানি না শুনে, তদন্ত রিপোর্ট আসার আগেই আগামী ধার্য তারিখ পর্যন্ত আসামীদের জামিন দিলেন। আমাদের দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতায় একটা হত্যাকাণ্ড ঘটনায় আসামী সাত দিনের মধ্যে জামিন পান আমরা দেখিনি। আসামীরা জামিন পেলে বাদী কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন এবং নিচে পড়ে যায়। তাকে তুলতে গেলে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে পায়ের একটি স্যান্ডেল সিটকে উপরে উঠে। তিনি আদালতকে বলতে থাকেন, একটি হত্যা মামলার আসামী সকলে জামিন পেলেন। একজনেও জেল হাজতে গেল না। আমরা সবাই নিরাপত্তা হীনতায় থাকবো। আমি নিজেও আদালতকে বলেছি এ ধরনের অপরাধে আসামীরা জামিন পেলে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হবে। এ ঘটনায় অ্যাডভোকেট আবু ইউনুস আলী (লেলিন) বলেন, জামিন শুনানি হচ্ছিল। বাদী পক্ষ থেকে আপত্তি দিয়েছিল। আদালত শুনানিতে সন্তুষ্ট হয়ে আসামীদের জামিন দিলে বাদী বিচারককে স্যান্ডেল ছুড়ে মারেন। কাউকে জামিন দেওয়া বা নাদেওয়া সেটা আদালতের ব্যাপার। বিচার চলাকালীন বিচারকের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে জুতা ছুঁড়ে মারা, আজকে উনাকে মারছে কালকে আরেক জনকে মারবে এটা ঠিক হয়নি।