pub-4902861820262150
2:32 am, Sunday, 27 October 2024

পঞ্চগড়ে চেয়ারম্যান’কে মাদকসহ ফাঁসাতে গিয়ে জনতার কাছে অবরুদ্ধ বিজিবি সদস্যরা

প্রতিনিধির নাম

মোঃ রাশেদুল ইসলাম, পঞ্চগড়।।

পঞ্চগড়ের তেতুলিয়া উপজেলার ৬নং ভজনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে মাদকসহ ফাঁসাতে গিয়ে জনতার কাছে অবরুদ্ধ হয়েছে ১৮ বিজিবি সদস্যরা। শুক্রবার (২৫- অক্টোবর) সকালে ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ মুসলিম উদ্দিন এর বাড়িতে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটে। সকাল আনুমানিক ১১টা থেকে বিকেল ৪টা ৩০মিনিট পর্যন্ত অবরুদ্ধ পরিস্থিতি চলমান ছিল। প্রত্যক্ষদর্শী, ভুক্তভোগী চেয়ারম্যানের পরিবার ও স্থানীয়রা জানান, সকাল বেলা পঞ্চগড় ব্যাটালিয়ন ১৮ বিজিবি এর অধীনস্থ ভুতিপুকুর বিওপি এর দুজন বিজিবি সদস্য চেয়ারম্যান এর বাড়িতে যায়। পরে আরো প্রায় ২৫/৩০ জন বিজিবি সদস্য সেখানে উপস্থিত হয়ে বাড়ির সবার মুঠোফোন কেড়ে নেয়। তারা নিজেরাই ১০৭ বোতল ফেনসিডিল চেয়ারম্যান এর রুমে রেখে মাদক উদ্ধার এর নাটক সাজিয়ে চেয়ারম্যানকে নিয়ে যাওয়ার জন্য গাড়িতে উঠান। পড়ে বিষয়টি জানাজানি হতেই সড়ক ব্যারিকেড দেয় স্থানীয় সাধারণ মানুষ। পরে চেয়ারম্যানকে গাড়ি থেকে নামিয়ে নেয় উত্তপ্ত জনতা। একপর্যায়ে আরো বিজিবি সদস্য ঘটনা স্থলে উপস্থিত হলে চেয়ারম্যান এর বাড়ির সড়ক ও পঞ্চগড়-বাংলাবান্ধা মহাসড়কের ভজনপুর বাজারের সড়ক অবরোধ করা হয়। এ সময় উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য, সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানগন সহ স্থানীয় হাজার হাজার মানুষ চেয়ারম্যান এর বাড়িতে অবস্থান নেন। পরবর্তীতে তেতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ফজলে রাব্বি, পঞ্চগড় ব্যাটালিয়ন (১৮- বিজিবি) এর অধিনায়ক লেঃ কর্নেল মোঃ জিয়াউল হক, উপজেলার অন্যান্য জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে আলোচনার মাধ্যমে গৃহীত সিদ্ধান্ত মোতাবেক বিজিবি ভুল স্বীকার করার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। বিষয়টি নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মুসলিম উদ্দিন বলেন,  কিছুদিন পূর্বে আমি এবং আমার ইউপি সদস্যরা মিলে তিনটি গরু উদ্ধারপূর্বক এক ইউপি সদস্যের বাড়িতে রাখি। সেখান থেকে বিজিবি সদস্যরা গরু ক্যাম্পে নিয়ে যেতে চাইলে তাদের সাথে কথা কাটাকাটি হয়। ওই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে তারা আজকে আমার বাড়িতে পরিকল্পিতভাবে মাদক দেখে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করে। এ বিষয়ে পঞ্চগড় ব্যাটালিয়ন ১৮ বিজিবি এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিয়াউল হক বলেন, আজকের ঘটনায় চেয়ারম্যান এর বিরুদ্ধে পরবর্তীতে কোন মামলা হবে না। মাদক উদ্ধারের বিষয়েটি কেউ চক্রান্ত করতে পারে। সীমান্তে চোরাচালান প্রতিরোধ বিজিবির দ্বায়িত্ব। এই ঘটনাটি ভুল বোঝাবুঝি হতে পারে। সমস্যা হলে তার সমাধান আছে। বিজিবি’র পক্ষ থেকে আমরা দুঃখ প্রকাশ করেছি এবং যারা এই ঘটনার সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তীতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। স্থানীয়রা জানান, এ ধরনের ঘটনা বিজিবি’র সাথে সাধারণ মানুষের দূরত্ব সৃষ্টি করবে। দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন অনেকেই।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপডেট সময় : 06:02:10 pm, Saturday, 26 October 2024
28 বার পড়া হয়েছে
error: Content is protected !!

পঞ্চগড়ে চেয়ারম্যান’কে মাদকসহ ফাঁসাতে গিয়ে জনতার কাছে অবরুদ্ধ বিজিবি সদস্যরা

আপডেট সময় : 06:02:10 pm, Saturday, 26 October 2024

মোঃ রাশেদুল ইসলাম, পঞ্চগড়।।

পঞ্চগড়ের তেতুলিয়া উপজেলার ৬নং ভজনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে মাদকসহ ফাঁসাতে গিয়ে জনতার কাছে অবরুদ্ধ হয়েছে ১৮ বিজিবি সদস্যরা। শুক্রবার (২৫- অক্টোবর) সকালে ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ মুসলিম উদ্দিন এর বাড়িতে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটে। সকাল আনুমানিক ১১টা থেকে বিকেল ৪টা ৩০মিনিট পর্যন্ত অবরুদ্ধ পরিস্থিতি চলমান ছিল। প্রত্যক্ষদর্শী, ভুক্তভোগী চেয়ারম্যানের পরিবার ও স্থানীয়রা জানান, সকাল বেলা পঞ্চগড় ব্যাটালিয়ন ১৮ বিজিবি এর অধীনস্থ ভুতিপুকুর বিওপি এর দুজন বিজিবি সদস্য চেয়ারম্যান এর বাড়িতে যায়। পরে আরো প্রায় ২৫/৩০ জন বিজিবি সদস্য সেখানে উপস্থিত হয়ে বাড়ির সবার মুঠোফোন কেড়ে নেয়। তারা নিজেরাই ১০৭ বোতল ফেনসিডিল চেয়ারম্যান এর রুমে রেখে মাদক উদ্ধার এর নাটক সাজিয়ে চেয়ারম্যানকে নিয়ে যাওয়ার জন্য গাড়িতে উঠান। পড়ে বিষয়টি জানাজানি হতেই সড়ক ব্যারিকেড দেয় স্থানীয় সাধারণ মানুষ। পরে চেয়ারম্যানকে গাড়ি থেকে নামিয়ে নেয় উত্তপ্ত জনতা। একপর্যায়ে আরো বিজিবি সদস্য ঘটনা স্থলে উপস্থিত হলে চেয়ারম্যান এর বাড়ির সড়ক ও পঞ্চগড়-বাংলাবান্ধা মহাসড়কের ভজনপুর বাজারের সড়ক অবরোধ করা হয়। এ সময় উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য, সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানগন সহ স্থানীয় হাজার হাজার মানুষ চেয়ারম্যান এর বাড়িতে অবস্থান নেন। পরবর্তীতে তেতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ফজলে রাব্বি, পঞ্চগড় ব্যাটালিয়ন (১৮- বিজিবি) এর অধিনায়ক লেঃ কর্নেল মোঃ জিয়াউল হক, উপজেলার অন্যান্য জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে আলোচনার মাধ্যমে গৃহীত সিদ্ধান্ত মোতাবেক বিজিবি ভুল স্বীকার করার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। বিষয়টি নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মুসলিম উদ্দিন বলেন,  কিছুদিন পূর্বে আমি এবং আমার ইউপি সদস্যরা মিলে তিনটি গরু উদ্ধারপূর্বক এক ইউপি সদস্যের বাড়িতে রাখি। সেখান থেকে বিজিবি সদস্যরা গরু ক্যাম্পে নিয়ে যেতে চাইলে তাদের সাথে কথা কাটাকাটি হয়। ওই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে তারা আজকে আমার বাড়িতে পরিকল্পিতভাবে মাদক দেখে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করে। এ বিষয়ে পঞ্চগড় ব্যাটালিয়ন ১৮ বিজিবি এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিয়াউল হক বলেন, আজকের ঘটনায় চেয়ারম্যান এর বিরুদ্ধে পরবর্তীতে কোন মামলা হবে না। মাদক উদ্ধারের বিষয়েটি কেউ চক্রান্ত করতে পারে। সীমান্তে চোরাচালান প্রতিরোধ বিজিবির দ্বায়িত্ব। এই ঘটনাটি ভুল বোঝাবুঝি হতে পারে। সমস্যা হলে তার সমাধান আছে। বিজিবি’র পক্ষ থেকে আমরা দুঃখ প্রকাশ করেছি এবং যারা এই ঘটনার সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তীতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। স্থানীয়রা জানান, এ ধরনের ঘটনা বিজিবি’র সাথে সাধারণ মানুষের দূরত্ব সৃষ্টি করবে। দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন অনেকেই।