10:30 am, Saturday, 27 July 2024

দোহারে সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রের ৪ সদস্য গ্রেপ্তার : অস্ত্র ও মালামাল উদ্ধার

দোহার (ঢাকা) প্রতিনিধি।

দোহার (ঢাকা) প্রতিনিধি।

ঢাকার দোহার উপজেলায় সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রের ৪ জন আসামীকে গ্রেপ্তার ও ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত অস্ত্র এবং মামলামাল উদ্ধার করেছে দোহার থানা পুলিশ। বুধবার রাত ১১ টার দিকে দোহার সার্কেল এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ আশরাফুল আলম এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, দোহার উপজেলার পশ্চিম নুরপুর লেংড়ার ব্রীজ সংলগ্ন আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে মোঃ আল-আমিন (২৫), ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা উপজেলার নরকোনা এলাকার মৃত বিল্লাল উদ্দিনের ছেলে মোঃ আলী (৫৫), মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার লক্ষীপুর এলাকার আব্দুল গাফফারের ছেলে মোঃ রাকিব (২৩) ও ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা উপজেলার গন্দরবপুর এলাকার মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে মোঃ জাফর আলী (৩৬)।

প্রেস বিজ্ঞপ্তি সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ১৭ নভেম্বর দোহার উপজেলার রাধানগর দক্ষিণ এলাকার বাসিন্দা মৃত তাজেল মোল্লার ছেলে মোঃ ছন্দু মোল্লা (৪৮) প্রতিদিনের ন্যায় রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে রাতের খাবার খেয়ে সেমিপাকা ঘরে ঘুমিয়ে পড়ে। পরে ওই দিন দিবাগত রাত আনুমানিক পৌনে ৩ টার দিকে অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জন সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্র দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রসহ তার বসতঘরের কাঠের দরজা ভেঙ্গে ঘরে ভেতর প্রবেশ করে ধাঁরালো চাপাতি দিয়ে মোঃ ছন্দু মোল্লার ছেলে রেজাউল করিম রাজনের বাম হাতে কোপ দিয়ে জখম করে। এরপর ডাকাতরা রেজাউল করিম রাজনের দু-হাত গামছা দিয়ে পিছন দিকে বেধে পরিববারের সব লোকজনকে খুন করার ভয়ভীতি দেখিয়ে দেশীয় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে প্রায় এক ভরি ওজনের বিভিন্ন স্বর্ণালংকারসহ ৩টি মোবাইল সেট ২টি টর্চ লাইট লুট করে নিয়ে যায়। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ১ লক্ষা ৫০ হাজার টাকা।

এ ঘটনার দুইদিন পর মোঃ ছন্দু মোল্লা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জন ডাকাতের বিরুদ্ধে দোহার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যাহার মামলা নং- ০৭, তারিখ-১৯-১২-২০২৩ এবং ধারা নং-৩৯৫ ও ৩৯৭।

এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার প্রেক্ষিতে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মোঃ আসাদুজ্জামান পিপিএম (বার) এর নির্দেশে পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আমিনুল ইসলামের দিক নির্দেশনায় দোহার সার্কেল এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ আশরাফুল আলম এর সরাসরি তত্ত¡াবধায়নে ও অপারেশন পরিকল্পনায় এবং দোহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ হারুন-অর রশিদ এর নের্তৃত্বে দোহার থানা পুলিশের একটি চৌকস টিম তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনার সাথে জড়িত ৮ জন স্থানীয় ডাকাতকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।

এ বিষয়ে দোহার সার্কেল এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ আশরাফুল আলম বলেন, ইতিপূর্বে গ্রেপ্তারকৃত ডাকাতদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ডাকাত দলের মূল হোতাসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তাার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত আসামীরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন।

তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তারকৃত মোঃ আলী সবার কাছে মুরুব্বী বা ডাকাত সর্দার হিসেবে পরিচিত। তিনি বিভিন্ন স্থানে স্থানীয় ডাকাতদের সাথে কথা বলে কাজ নেন। পরে একেক সময় একেক দলকে কাজে লাগান। এ ছাড়া তারা জেলখানায় বিভিন্ন ডাকাতদের সাথে পরিচয়ের মাধ্যমে নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেন বলে।

দোহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ হারুন-অর রশিদ বলেন, গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের দেখানো মতে আসামীদের বিভিন্ন জায়গায় রাখা লুন্ঠিত একটি স্বর্ণের কানের দুল (ঝুমকা) ও ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত চাপাতি, ধাঁরালো সুইচ গিয়ার চাকু, লোহার ছ্যান, টর্চ লাইট, সেলাই রেঞ্জ, প্লাস, স্যামসাং গ্যালাক্সি এম ১১ মডেলের অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

তিনি আরও জানান, গ্রেপ্তারকৃতরা একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রের সদস্য। দীর্ঘদিন যাবত এরা সংঘবদ্ধ ভাবে রেকি করে বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতি করে আসছে। তারা সকলেই পেশাদার ডাকাত। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় চুরি-ডাকাতিসহ অস্ত্র আইনে একাধিক মামলা রয়েছে। তাদের সবাইকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদের পর বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপডেট সময় : 06:02:41 pm, Thursday, 25 January 2024
113 বার পড়া হয়েছে
error: Content is protected !!

দোহারে সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রের ৪ সদস্য গ্রেপ্তার : অস্ত্র ও মালামাল উদ্ধার

আপডেট সময় : 06:02:41 pm, Thursday, 25 January 2024

দোহার (ঢাকা) প্রতিনিধি।

ঢাকার দোহার উপজেলায় সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রের ৪ জন আসামীকে গ্রেপ্তার ও ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত অস্ত্র এবং মামলামাল উদ্ধার করেছে দোহার থানা পুলিশ। বুধবার রাত ১১ টার দিকে দোহার সার্কেল এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ আশরাফুল আলম এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, দোহার উপজেলার পশ্চিম নুরপুর লেংড়ার ব্রীজ সংলগ্ন আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে মোঃ আল-আমিন (২৫), ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা উপজেলার নরকোনা এলাকার মৃত বিল্লাল উদ্দিনের ছেলে মোঃ আলী (৫৫), মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার লক্ষীপুর এলাকার আব্দুল গাফফারের ছেলে মোঃ রাকিব (২৩) ও ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা উপজেলার গন্দরবপুর এলাকার মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে মোঃ জাফর আলী (৩৬)।

প্রেস বিজ্ঞপ্তি সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ১৭ নভেম্বর দোহার উপজেলার রাধানগর দক্ষিণ এলাকার বাসিন্দা মৃত তাজেল মোল্লার ছেলে মোঃ ছন্দু মোল্লা (৪৮) প্রতিদিনের ন্যায় রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে রাতের খাবার খেয়ে সেমিপাকা ঘরে ঘুমিয়ে পড়ে। পরে ওই দিন দিবাগত রাত আনুমানিক পৌনে ৩ টার দিকে অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জন সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্র দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রসহ তার বসতঘরের কাঠের দরজা ভেঙ্গে ঘরে ভেতর প্রবেশ করে ধাঁরালো চাপাতি দিয়ে মোঃ ছন্দু মোল্লার ছেলে রেজাউল করিম রাজনের বাম হাতে কোপ দিয়ে জখম করে। এরপর ডাকাতরা রেজাউল করিম রাজনের দু-হাত গামছা দিয়ে পিছন দিকে বেধে পরিববারের সব লোকজনকে খুন করার ভয়ভীতি দেখিয়ে দেশীয় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে প্রায় এক ভরি ওজনের বিভিন্ন স্বর্ণালংকারসহ ৩টি মোবাইল সেট ২টি টর্চ লাইট লুট করে নিয়ে যায়। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ১ লক্ষা ৫০ হাজার টাকা।

এ ঘটনার দুইদিন পর মোঃ ছন্দু মোল্লা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জন ডাকাতের বিরুদ্ধে দোহার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যাহার মামলা নং- ০৭, তারিখ-১৯-১২-২০২৩ এবং ধারা নং-৩৯৫ ও ৩৯৭।

এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার প্রেক্ষিতে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মোঃ আসাদুজ্জামান পিপিএম (বার) এর নির্দেশে পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আমিনুল ইসলামের দিক নির্দেশনায় দোহার সার্কেল এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ আশরাফুল আলম এর সরাসরি তত্ত¡াবধায়নে ও অপারেশন পরিকল্পনায় এবং দোহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ হারুন-অর রশিদ এর নের্তৃত্বে দোহার থানা পুলিশের একটি চৌকস টিম তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনার সাথে জড়িত ৮ জন স্থানীয় ডাকাতকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।

এ বিষয়ে দোহার সার্কেল এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ আশরাফুল আলম বলেন, ইতিপূর্বে গ্রেপ্তারকৃত ডাকাতদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ডাকাত দলের মূল হোতাসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তাার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত আসামীরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন।

তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তারকৃত মোঃ আলী সবার কাছে মুরুব্বী বা ডাকাত সর্দার হিসেবে পরিচিত। তিনি বিভিন্ন স্থানে স্থানীয় ডাকাতদের সাথে কথা বলে কাজ নেন। পরে একেক সময় একেক দলকে কাজে লাগান। এ ছাড়া তারা জেলখানায় বিভিন্ন ডাকাতদের সাথে পরিচয়ের মাধ্যমে নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেন বলে।

দোহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ হারুন-অর রশিদ বলেন, গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের দেখানো মতে আসামীদের বিভিন্ন জায়গায় রাখা লুন্ঠিত একটি স্বর্ণের কানের দুল (ঝুমকা) ও ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত চাপাতি, ধাঁরালো সুইচ গিয়ার চাকু, লোহার ছ্যান, টর্চ লাইট, সেলাই রেঞ্জ, প্লাস, স্যামসাং গ্যালাক্সি এম ১১ মডেলের অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

তিনি আরও জানান, গ্রেপ্তারকৃতরা একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রের সদস্য। দীর্ঘদিন যাবত এরা সংঘবদ্ধ ভাবে রেকি করে বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতি করে আসছে। তারা সকলেই পেশাদার ডাকাত। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় চুরি-ডাকাতিসহ অস্ত্র আইনে একাধিক মামলা রয়েছে। তাদের সবাইকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদের পর বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।