পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে মাদরাসায় অনিয়ম ও দূর্নীতি করে উপাধ্যক্ষ নিয়োগ
মাদরাসার সভাপতিই জানেন না যে তার মাদরাসায় উপাধ্যক্ষ নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এমন ঘটনা ঘটেছে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার ভাউলাগঞ্জ দারুচ্ছালাম নেছারিয়া আলিম মাদরাসায়।
উপাধ্যক্ষ নিয়োগে ব্যাপক দূর্নীতি আর অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়রা জানান, এ মাদরাসায় তদন্ত করলে অধ্যক্ষ আজিবুর রহমানের অনিয়ম ও দূর্নীতির থতিয়ান বের হয়ে আসবে। মাদরাসাটি অনিয়ম ও দূর্নীতির আখড়ায় পরিনত করেছে সে। তারা তার সুষ্ঠ তদন্ত চান। স্থানীয়রা আরও জানান, মাদরাসাটিতে একের পর এক লোক নিয়োগ দেয়া হয়েছে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে।
মাদরাসার সভাপতি ও ডিজি প্রতিনিধির স্বাক্ষর জাল করে মাদরাসার উপাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে শহিদুল ইসলামকে।
অভিযোগ রয়েছে নিয়োগের জন্য সভাপতিকে না জানিয়েই পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়া হয় আবার সভাপতিরই স্বাক্ষর জাল করে নিয়োগ দেয়া হয়। দিনাজপুরের পার্বতীপুরে পরীক্ষা নিয়ে উপাধ্যক্ষ নিয়োগ দেন অধ্যক্ষ।
পরে গভর্নিং বডির সভাপতি আজম উল করিম বুঝতে পেরে নিয়োগের বিষয়ে ও মাদরাসার আয়-ব্যয় সম্পর্কে অধ্যক্ষের নিকট জানতে চাইলে মারামারির ঘটনা ঘটে। তার পরেই বেড়িয়ে আসে অনিয়ম আর দূর্নীতির থলের বিড়াল। অধ্যক্ষ আজিবুর রহমানের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করা হলেও অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও নিয়োগ দেয়া হয়েছে। সুষ্ঠু তদন্ত করে আইনগত পদক্ষেপ নেয়ার জোর দাবী জানিয়েছেন সভাপতি ও স্থানীয়রা।
জানা যায়, মাদরাসার সুপারিন্টেন্ডেন্ট নিয়োগের জন্য দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় ১৯৯০ সালে। বিএসসি, বিএ, সহকারী মোদারেছ কামিল দ্বিতীয়সহ ৫ বছরের অভিজ্ঞতা চাওয়া হয় নিয়োগের সার্কুলারে। কিন্তু নিয়োগ প্রাপ্ত আজিবুর রহমান কামিল পাশ করেন ১৯৮৯ সালে। অভিজ্ঞতা সম্পন্ন শিক্ষক না পেলে নিয়ম আছে পুনরায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের কিন্তু এ ক্ষেত্রে তার নিয়ম মানা হয়নি। অবৈধভাবে দেয়া হয়েছে নিয়মিত ছাত্র আজিবুর রহমানকে দায়িত্ব। এছাড়াও পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করেছেন দুজন। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসনে বারবার অভিযোগ করেও কোন সুরাহ হয়নি। পরবর্তীতে মাদরাসাটি দাখিল থেকে আলিম হলে সুপারিন্টেন্ডেন্ট থেকে দায়িত্ব পালন করেন অধ্যক্ষের। নিয়োগ প্রাপ্ত উপাধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম জানান, নিয়োগ পরীক্ষায় ডিজির প্রতিনিধি ছিলেন বগুড়া সরকারি মুস্তাফারিয়া আলিয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ। তবে অধ্যক্ষ মোখলেছুর রহমান বলেন, ওই মাদরাসার নিয়োগ সম্পর্কে আমার জানা নাই। মাদ্রাসা গভর্নিং বডি সভাপতি আজম উল করিম জানান, অধ্যক্ষ নিয়োগের বিষয়টি জানিনা আর উপাধ্যক্ষ নিয়োগ দিয়েছে অধ্যক্ষ আমার স্বাক্ষর জাল করে। অধ্যক্ষ আজিবুর রহমান আমাকে বলেছেন এ পদে কোন নিয়োগ হয়না পদন্নোতিতে হয়।
দেবীগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সলিমুল্লাহ জানান, ওই মাদরাসার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ। অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন তার ছেলে। নিয়োগের বিষয়ে আমাদের কিছু জানায়নি।
একেএম বজলুর রহমান
পঞ্চগড় প্রতিনিধি।