সরিষা ক্ষেত থেকে সংগ্রহ করা হচ্ছে মধু।
আতাউর রহমান ,দেবীগঞ্জ ।।
এ যেন দেখা যায় হলুদ রাজ্য। যেদিকে চোখ যায় হলুদের সমারোহ। বাতাসে মাঠে দোল খাচ্ছে সরিষা গাছ। সরিষা ক্ষেতে স্থাপন করা হয়েছে মৌ-বাক্স। কিছুদিন পরপর সরিষা ক্ষেত থেকে সংগ্রহ করা হচ্ছে মধু। ক্ষেতে মৌমাছির আনাগোনা বেড়ে যায়, সরিষার ফলনও হয়েছে দারুন। দেবীগঞ্জ উপজেলার সরিষা ক্ষেতে মধু উৎপাদন করে দারুণ সাফল্য পাওয়ার আশা করছনে চাষিরা। এতে তারা আর্থিকভাবেও দারুণ লাভবান হয়েছেন। ভালো লাভ হওয়ায় এলাকায় সরিষা ও মৌচাষে আগ্রহ বেড়েছে।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোছা :শেফালী বেগম বলেন, দেবীগঞ্জ উপজেলার ৫নং সুন্দরদিঘী ইউনিয়নের শিবের হাট ব্লকে সরিষার আবাদ ভালো হয়। তাই যারা সরিষা চাষাবাদ করেন তাদের মৌচাষে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে, এতে অনেকের কর্মসংস্থান হবে এবং পরাগায়নের ফলে সরিষার উৎপাদন বাড়বে ১৫ শতাংশ।
উপজেলার শিবের হাট এলাকার কৃষক গণ বলেন এবার অনেকে জমিতে সরিষা চাষ করেছে । পাশাপাশি উপসহকারি কৃষি অফিসারের পরামর্শে মধু সংগ্রহে ক্ষেতে স্থাপন করেছেন মৌ-বাক্স।
ইতোমধ্যে মধু আহরণ শুরু করেছেন অনেকে এতে সরিষার পাশাপাশি মধু উৎপাদন করে আর্থিকভাবে অনেকে লাভবান হচ্ছেন কৃষক গণ।
মমিনুল ইসলাম,কৃষক শিবেরহাট জানান তিনি প্রতি বছর সরিষার চাষাবাদ করেন। তবে এবার উপসহকারি কৃষি অফিসার শেফালী আপার পরামর্শে সরিষার পাশাপাশি মৌচাষ করেছি। প্রথম পর্যায়ে একটি রানী মৌমাছির সঙ্গে ১,৬০০টি মৌমাছি সংগ্রহ করছিলেন।
এখন মৌমাছি বংশ বৃদ্ধি করে সংখ্যায় ৪ থেকে ৫ হাজার হয়েছে। তিনি প্রতি ৭ দিন অন্তর ২ থেকে ২.৫০০ কেজি মধু আহরণ করতে পারেন।
উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলায় সরিষার চাষ বেড়েছে। এবার ৫হাজার ৩৩৩ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে সরিষা।
অল্প পরিশ্রম, কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় সরিষা চাষে দিনদিন আগ্রহী হয়ে উঠছেন কৃষকরা। চলতি মৌসুমে কৃষকদের সরিষার পাশাপাশি মৌচাষে উদ্বুদ্ধ করার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে একজন কৃষককে প্রায় ৩৬ হাজার টাকার মৌচাষের সরঞ্জাম প্রদান করা হয়েছে।
যেখানে রয়েছে মৌ-বাক্স, মধু সংগ্রহের মেশিন, ড্রাম। উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোছা :শেফালী বেগম জানান, নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাসে সরিষার চাষাবাদ ও ফলন হয়। চলতি মৌসুমে উপজেলায় সরিষার চাষাবাদ বেড়েছে, সরিষা ক্ষেতে মৌ-চাষে বেশ আগ্রহ দেখাচ্ছেন চাষিরা।
সরিষার ক্ষেতে মৌমাছি ফুলের ওপর বসলে পরাগায়নে ফসলের পুষ্টি বৃদ্ধি হয়। শুধু সরিষাই নয়, মৌমাছি ফুলের পরাগায়ন ঘটিয়ে নানা ধরনের রবি শস্যের ফলন বৃদ্ধি করে।”তিনি আরো বলেন আগে মৌ-চাষ হতো না বললেই চলে।
তাই এখন মৌ-চাষে চাষিদের উদ্বুদ্ধ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এবার একজন কৃষকের মাধ্যমে ১৮ টি বক্স দিয়ে সরিষার পাশাপাশি মৌ-চাষ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে তিনি মধু আহরণ শুরু করেছেন। তার সাফল্যের কথা শুনে অনেকেই উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।’ এবছর সরিষার পাশাপাশি ৫নং সুন্দর দিঘী ইউনিয়ন এলাকায় নতুন করে পেঁয়াজ, গম সহ বিভিন্ন ফসলের চাষাবাদ ভালো হয়েছে হচ্ছে বলে তিনি জানান।