মাদ্রাসায় না থেকে বেতন নেন অফিস সহকারী ডিসি এসপি হিসেব করার সময় নেই বলে জানান
পঞ্চগড়ে মাদ্রাসায় উপস্থিত না থেকে বেতন নেন অফিস সহকারী ডিসি এসপি হিসেব করার সময় নেই পঞ্চগড় প্রতিনিধি।। পঞ্চগড়ে’র তেঁতুলিয়া উপজেলার মাঝিপাড়া (শালবাহান রোড) দাখিল মাদ্রাসার অফিস সহকারী মোঃ শাহ আলম বাবুল প্রতিষ্ঠানে বেতন নেন কিন্তু অফিস করেন না। স্থানীয়দের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সত্যতা যাচাইয়ের জন্য সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় শুধু অফিস সহকারী মোঃ শাহ আলম বাবুল নয় পুরো প্রতিষ্ঠানটি চলছে নিয়ম শৃঙ্খলা বহির্ভূত ভাবে।
মাদ্রাসার একাধিক শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তিনি মাঝে মাঝে মাদ্রাসায় এসে স্বাক্ষর করে চলে যান। নবম দশম শ্রেণীর অনেক শিক্ষার্থীরা তাকে চিনতেই পারছেন না। তবে মাদ্রাসার সুপার মোঃ রুহুল আমিন বিষয়টি নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের বিপরীতে সহযোগিতা করে আসছেন দীর্ঘদিন ধরেই। বিদ্যালয়ে শিক্ষক হাজিরা খাতায় নিয়মিত স্বাক্ষর দেখা গেছে শাহ আলম বাবুলের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি জানান, শাহ আলম বাবুল সব সময় অন্য রকম ক্ষমতার দাপট নিয়ে চলেন। কেউ তাকে কিছু বলার সাহস পায় না। প্রতিষ্ঠান চলাকালীন তিনি ব্যক্তিগত ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত। একমাত্র বাবুলের জন্য বর্তমানে পুরো প্রতিষ্ঠান চলছে ইচ্ছে মতো। তবে স্থানীয়দের সব তথ্যের সত্যতা পাওয়া গেছে সরেজমিনে। নির্ধারিত সময়ে দুই দিন মাদ্রাসায় গিয়ে শিক্ষক, ছাত্র ছাত্রী কাউকে পাওয়া যায় নি। তৃতীয় দিনে পাওয়া গেলেও ক্লাস চলাকালীন সময়ে শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা নিয়ে ব্যস্ত। নাম মাত্র শিক্ষার্থীর মাদ্রাসায় উপস্থিতি, কিছু সংখ্যক শিক্ষক অফিস কক্ষে ব্যস্ত। আবার হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর থাকলেও অফিস সহকারী মোঃ শাহ আলম বাবুল মাদ্রাসায় ছিলেন না। বিষয়টি নিয়ে মাদ্রাসার সুপার মোঃ রুহুল আমিন বলেন, এখন আর অফিস সহকারীদের আগের মতো কাজ নেই। সব কিছুই হয় কম্পিউটারের মাধ্যমে। শাহ আলম বাবুল আগে নিয়মিত ছিল না। পরে আমরা আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করি। বর্তমানে তিনি সব সময় মাদ্রাসায় উপস্থিত থাকেন। সব সময় থাকলে এখন নেই কেন ? এমন প্রশ্নের কোন সঠিক উত্তর দিতে পারেন নি মাদ্রাসার সুপার।
তবে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন অফিস সহকারী মোঃ শাহ আলম বাবুল। তিনি প্রথমে বলেন শারীরিক অসুস্থতার কারণে নিয়মিত মাদ্রাসায় আসতে পারি না। পরে বলেন, আপনারা (সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে) আমাকে চিনবেন না। যা পারেন লিখেন। এ বিষয়ে আমি তেঁতুলিয়ার ইউএনও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নামে মামলা করেছিলাম। তিনি আমার বাসায় এসে সমাধান করে গেছে। প্রেসক্লাবের সিনিয়র সাংবাদিকদের আমার সাথে ভালো সম্পর্ক। তারা আমাকে চিনে। আমি একসময় এই এলাকার ডন ছিলাম। ডিসি এসপি’কে হিসেব করার সময় আমার নেই। তার এই কথাগুলোর সাথে স্থানীয়দের তথ্যের সঠিক মিল পাওয়া গেছে।
তবে স্থানীয়রা প্রশ্ন তোলেন, আপনাদের এই লেখায় কোন লাভ হবে কি ? আমরা জানি ক্ষমতার কাছে সবাই মাথা নত করে। আর যে কারনে পড়াশোনার মান দিন দিন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। যত বড়ো অপরাধ করুক না কেন কোন শিক্ষকের চাকুরিও যাবে না, আবার বেতনও বন্ধ হবে না। তার পরেও নতুন প্রজন্মকে সুশিক্ষার আলোয় আলোকিত করতে বর্তমান সরকার ও সংশ্লিষ্টদের একটু মানবিক হয়ে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দ্বাবী জানান অভিবাবক সহ স্থানীয় সাধারণ মানুষ।