pub-4902861820262150
4:34 pm, Tuesday, 22 October 2024

আমতলী সরকারী কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে গাছ কাটা, সনদ ও মার্কসিট নিতে টাকা আদায়সহ নানা অভিযোগ

প্রতিনিধির নাম

বরগুনা প্রতিনিধি:

বরগুনার আমতলী সরকারী কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে বিনা অনুমতিতে টেন্ডার ছাড়াই সরকারী গাছ কেটে বিক্রি, সনদ ও মার্কসিট নিতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায়, ভাড়া পরিশোধ না করে কলেজের কক্ষ দখল করে বসবাস করাসহ একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। জানা গেছে, আমতলী সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে প্রফেসর মো. জসিম উদ্দিন ২০২৩ সালের ১৬ নভেম্বর যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকে সে কলেজের প্রশাসনিক ভবনের তৃতীয় তলার ৩০৮ নম্বর ল্যাবের একটি কক্ষ ৩-৪ লক্ষ টাকা ব্যায় করে টিভি, ফ্রিজসহ নানা ধরনের মালামাল দিয়ে সজ্জিত করন করে সেখানে বসবাস করে আসছেন। দীর্ঘদিন ধরে সরকারী ভবনে বসবাস করলেও তিনি এপর্যন্ত কোন ভাড়া টাকা পরিশোধ করেনি। তিনি কলেজে যোগদানের পর থেকে বিভিন্ন সময় কলেজের ১২-১৩টি সরকারী রেন্ট্রি ও চাম্বল গাছ বিনা অনুমতিতে টেন্ডার ছাড়াই কেটে তা বিক্রি করেছেন। অভিযোগ রয়েছে চেরাই করা মরা গাছের অবশিষ্ট অংশ স্ব-মিল থেকে কেটে এনে লোকদেখানোর জন্য কলেজের একটি কক্ষে তালাবদ্ধ করে রেখেছেন। এছাড়াও অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. জসিম উদ্দিন কলেজের পুকুর এবং লেক থেকে বিভিন্ন প্রজাতির বড় আকৃতির রুই কাতলসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরে তা তার ঢাকার বাসায় নিয়ে যান। মাছের মূল্য হিসেবে এখন পর্যন্ত তিনি কোন টাকা পরিশোধ করেননি। অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে এইচএসসি, বিএ ও বিএম শাখার পাসকৃত শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে সম্পূর্ন বে-আইনীভাবে সনদ ও মার্কসিট বিতরণের সময় জনপ্রতি ১০০ টাকা করে আদায় করারও অভিযোগ রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন এইচএসসি পাস শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, আমাদের সনদ ও মার্কসিট নিতে কলেজ কর্তৃপক্ষকে ১০০ টাকা পরিশোধ করতে হয়েছে। অধ্যক্ষ বিরুদ্ধে নিয়মিত কলেজে উপস্থিত না থাকারও অভিযোগ করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। কলেজ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা জানান, কলেজ খোলা থাকলেও অফিশিয়াল কাজের অজুহাত তুলে অধ্যক্ষ অধিকাংশ সময় ঢাকায় থাকা তার পরিবারের সাথে সময় কাটান। তারা আরো অভিযোগ করে বলেন, ক্লাশ নিশ্চিত করা এবং শিক্ষার মান বাড়ানোর ব্যাপারে তিনি খুবই উদাসীন। এছাড়া অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত বিভিন্ন জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহন না করার বিষয়টিও। ওই বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তার জানান, ১৬ ডিসেম্বর, ২১ ফেব্রæয়ারি ও ২৬ মার্চের মত জাতীয় দিবসের চিঠি অধ্যক্ষকে দেওয়া হলেও তিনি এগুলো এড়িয়ে যান এবং কোন অনুষ্ঠানেই তাকে অংশ নিতে দেখা যায় না। অধিকাংশ অনুষ্ঠানে তিনি প্রতিনিধি পাঠান। অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে পাবলিক পরীক্ষায় দায়িত্ব পালন করা ভিজিলেন্স টিমের সস্মানী না দিয়ে তিনি নিজে তা আত্মসাৎ করেন বলেও প্রশাসনের কর্মকর্তারা অভিযোগ করেন। গত বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিনে কলেজ ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা গেছে, কলেজের প্রবেশ পথের সড়কের মুখে এবং শেষ প্রান্তে এবং মসজিদের পিছনের সড়কের পাশে থাকা রেইট্রি গাছগুলো কেটে নেওয়ায় বিশাল আকারের গোড়া (গাছের নিচের অংশ) পরে রয়েছে। মাঠের পশ্চিম প্রান্তে পড়ে আছে কেটে নেওয়া চাম্বল গাছের গোড়া (নিচের অংশ)। একাডেমিক ভবনের তৃতীয় তলায় ল্যাবের জন্য নির্ধারিত ৩০৮ নম্বর কক্ষটি কলেজ ফান্ডের ২-৩ লক্ষ টাকা তুলে কক্ষ সাজানো হয়েছে। কক্ষের ভিতরে বসানো হয়েছে টিভি, ব্যবহারের জন্য কেনা হয়েছে ফ্রিজ। ওই কক্ষেই থাকেন অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. জসিম উদ্দিন। সরকারী টাকায় ওই কক্ষ সজ্জিত করা হলেও এখন পর্যন্ত তিনি কোন ভাড়াই পরিাশোধ করেননি। অভিযোগের বিষয়ে আমতলী সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. জসিম আবাসিক রুমের ভাড়া তিনি এখনো পরিশোধ করেননি বলে স্বীকার কররেও সরকারী গাছ কেটে বিক্রি, সনদ ও মার্কসিট বিতরণের সময় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১০০ টাকা করে আদায়, পুকুরের মাছ ধরে নিজের বাসায় নেওয়া এবং জাতীয় অনুষ্ঠানে যোগদান না করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, গাছগুলো কলেজের বেঞ্চ বানানোর জন্য কাটা হয়েছে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপডেট সময় : 06:00:54 pm, Sunday, 13 October 2024
21 বার পড়া হয়েছে
error: Content is protected !!

আমতলী সরকারী কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে গাছ কাটা, সনদ ও মার্কসিট নিতে টাকা আদায়সহ নানা অভিযোগ

আপডেট সময় : 06:00:54 pm, Sunday, 13 October 2024

বরগুনা প্রতিনিধি:

বরগুনার আমতলী সরকারী কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে বিনা অনুমতিতে টেন্ডার ছাড়াই সরকারী গাছ কেটে বিক্রি, সনদ ও মার্কসিট নিতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায়, ভাড়া পরিশোধ না করে কলেজের কক্ষ দখল করে বসবাস করাসহ একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। জানা গেছে, আমতলী সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে প্রফেসর মো. জসিম উদ্দিন ২০২৩ সালের ১৬ নভেম্বর যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকে সে কলেজের প্রশাসনিক ভবনের তৃতীয় তলার ৩০৮ নম্বর ল্যাবের একটি কক্ষ ৩-৪ লক্ষ টাকা ব্যায় করে টিভি, ফ্রিজসহ নানা ধরনের মালামাল দিয়ে সজ্জিত করন করে সেখানে বসবাস করে আসছেন। দীর্ঘদিন ধরে সরকারী ভবনে বসবাস করলেও তিনি এপর্যন্ত কোন ভাড়া টাকা পরিশোধ করেনি। তিনি কলেজে যোগদানের পর থেকে বিভিন্ন সময় কলেজের ১২-১৩টি সরকারী রেন্ট্রি ও চাম্বল গাছ বিনা অনুমতিতে টেন্ডার ছাড়াই কেটে তা বিক্রি করেছেন। অভিযোগ রয়েছে চেরাই করা মরা গাছের অবশিষ্ট অংশ স্ব-মিল থেকে কেটে এনে লোকদেখানোর জন্য কলেজের একটি কক্ষে তালাবদ্ধ করে রেখেছেন। এছাড়াও অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. জসিম উদ্দিন কলেজের পুকুর এবং লেক থেকে বিভিন্ন প্রজাতির বড় আকৃতির রুই কাতলসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরে তা তার ঢাকার বাসায় নিয়ে যান। মাছের মূল্য হিসেবে এখন পর্যন্ত তিনি কোন টাকা পরিশোধ করেননি। অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে এইচএসসি, বিএ ও বিএম শাখার পাসকৃত শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে সম্পূর্ন বে-আইনীভাবে সনদ ও মার্কসিট বিতরণের সময় জনপ্রতি ১০০ টাকা করে আদায় করারও অভিযোগ রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন এইচএসসি পাস শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, আমাদের সনদ ও মার্কসিট নিতে কলেজ কর্তৃপক্ষকে ১০০ টাকা পরিশোধ করতে হয়েছে। অধ্যক্ষ বিরুদ্ধে নিয়মিত কলেজে উপস্থিত না থাকারও অভিযোগ করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। কলেজ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা জানান, কলেজ খোলা থাকলেও অফিশিয়াল কাজের অজুহাত তুলে অধ্যক্ষ অধিকাংশ সময় ঢাকায় থাকা তার পরিবারের সাথে সময় কাটান। তারা আরো অভিযোগ করে বলেন, ক্লাশ নিশ্চিত করা এবং শিক্ষার মান বাড়ানোর ব্যাপারে তিনি খুবই উদাসীন। এছাড়া অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত বিভিন্ন জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহন না করার বিষয়টিও। ওই বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তার জানান, ১৬ ডিসেম্বর, ২১ ফেব্রæয়ারি ও ২৬ মার্চের মত জাতীয় দিবসের চিঠি অধ্যক্ষকে দেওয়া হলেও তিনি এগুলো এড়িয়ে যান এবং কোন অনুষ্ঠানেই তাকে অংশ নিতে দেখা যায় না। অধিকাংশ অনুষ্ঠানে তিনি প্রতিনিধি পাঠান। অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে পাবলিক পরীক্ষায় দায়িত্ব পালন করা ভিজিলেন্স টিমের সস্মানী না দিয়ে তিনি নিজে তা আত্মসাৎ করেন বলেও প্রশাসনের কর্মকর্তারা অভিযোগ করেন। গত বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিনে কলেজ ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা গেছে, কলেজের প্রবেশ পথের সড়কের মুখে এবং শেষ প্রান্তে এবং মসজিদের পিছনের সড়কের পাশে থাকা রেইট্রি গাছগুলো কেটে নেওয়ায় বিশাল আকারের গোড়া (গাছের নিচের অংশ) পরে রয়েছে। মাঠের পশ্চিম প্রান্তে পড়ে আছে কেটে নেওয়া চাম্বল গাছের গোড়া (নিচের অংশ)। একাডেমিক ভবনের তৃতীয় তলায় ল্যাবের জন্য নির্ধারিত ৩০৮ নম্বর কক্ষটি কলেজ ফান্ডের ২-৩ লক্ষ টাকা তুলে কক্ষ সাজানো হয়েছে। কক্ষের ভিতরে বসানো হয়েছে টিভি, ব্যবহারের জন্য কেনা হয়েছে ফ্রিজ। ওই কক্ষেই থাকেন অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. জসিম উদ্দিন। সরকারী টাকায় ওই কক্ষ সজ্জিত করা হলেও এখন পর্যন্ত তিনি কোন ভাড়াই পরিাশোধ করেননি। অভিযোগের বিষয়ে আমতলী সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. জসিম আবাসিক রুমের ভাড়া তিনি এখনো পরিশোধ করেননি বলে স্বীকার কররেও সরকারী গাছ কেটে বিক্রি, সনদ ও মার্কসিট বিতরণের সময় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১০০ টাকা করে আদায়, পুকুরের মাছ ধরে নিজের বাসায় নেওয়া এবং জাতীয় অনুষ্ঠানে যোগদান না করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, গাছগুলো কলেজের বেঞ্চ বানানোর জন্য কাটা হয়েছে।